কলকাতার অজানা মিথগুলোকে ছুঁয়ে দেখতে চান? হারিয়ে যেতে চান ধাঁধার রহস্যে? তাহলে অবশ্যই মন ভরাবে সায়ন্তন ঘোষালের ছবি ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’।

কলকাতার অজানা মিথগুলোকে ছুঁয়ে দেখতে চান? হারিয়ে যেতে চান ধাঁধার রহস্যে? তাহলে অবশ্যই মন ভরাবে সায়ন্তন ঘোষালের ছবি ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’।
কলকাতার অজানা মিথগুলোকে ছুঁয়ে দেখতে চান? হারিয়ে যেতে চান ধাঁধার রহস্যে? তাহলে অবশ্যই মন ভরাবে সায়ন্তন ঘোষালের ছবি ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’।
আলিনগরের গোলকধাঁধা
পরিচালক: সায়ন্তন ঘোষাল
অভিনয়: অনির্বাণ ভট্টাচার্য, পার্নো মিত্র, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, গৌতম হালদার
কলকাতার অজানা মিথগুলোকে ছুঁয়ে দেখতে চান? হারিয়ে যেতে চান ধাঁধার রহস্যে? তাহলে অবশ্যই মন ভরাবে সায়ন্তন ঘোষালের ছবি ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’। কলকাতার অনেক প্রাচীন মিথকে নিয়ে এ ছবি বুনেছে তার রহস্যের গল্প। আপাত অর্থে, গল্পটি একটি অন্বেষণের, এক হারানো অমূল্য সম্পদের খোঁজের। ১৯৯০ সালের সময়পটকে ঘিরে নির্মিত হয় এ ছবির প্রথমাংশ। সে সময়ের মুর্শিদাবাদ অঞ্চলের এক ভগ্নপ্রায় জমিদারবাড়িতে নিলামের দৃশ্য দিয়ে এ ছবির সূচনা। সেই নিলাম থেকে একটি পুরনো তলোয়ার কেনেন জনৈক সোমনাথ দাস। তারপর সোমনাথের মৃত্যুর হয় অত্যন্ত আকস্মিকভাবেই। কাহিনি এরপর বর্তমানের পটভূমিকায় ফিরে আসে। গল্পের কাহিনিপট ‘আলিনগর’ কলকাতা। সেই কলকাতার ইতিহাসের পরিক্রমার পথ ছুঁয়ে ছুঁয়ে কাহিনি তার রহস্যকে ঘনীভূত করে। ‘বাংলার আয়না’ গ্রন্থের লেখক আশুতোষ সিংহ (কৌশিক সেন) তাঁর মেয়ের (পার্নো) বন্ধু সোহমকে (অনির্বাণ) একটি সংকেতপূর্ণ চিঠি উদ্ধার করতে দেন। অন্যদিকে কৌশিক নিজে প্রতিদিনই একটি করে অদ্ভুত চিঠি পেতে থাকেন। আশুতোষের বাড়িতে থাকেন সাক্ষীগোপাল (পরাণ) যে বিগত অতীতের অনেক স্রোত-উপস্রোতের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এর বিপরীতবিন্দুতে অবস্থান আবীর মিত্তলের (গৌতম হালদার), যিনি সমস্তরকম নেগেটিভ বৃত্তিগুলিকে আয়ত্ত করেছেন, ছবিতে তাঁর প্রকাশ যদিও খানিকটা মেলোড্রামাটিক। এভাবেই রহস্যের পরত পড়তে থাকে ছবির কাহিনিতে। কাহিনিটি আকৃষ্ট করে, কিন্তু অনেক তথ্য এত গতিময়তার সঙ্গে পরিবেশিত হয় যে, সেটা দর্শকদের কাছে পৌঁছয় অবিন্যস্তভাবে। যদিও সুতানুটির সেকালের নানা কথকতা ছবির সঙ্গে উঠে আসে। মূল চরিত্রে অনির্বাণের অভিনয় প্রশংসনীয়। একাধারে ধাঁধার বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান, অন্যদিকে ইতিহাসমথন— এ দুইয়ের সমন্বয় অনির্বাণের চরিত্রে। পার্শ্বচরিত্রে পার্নো, কৌশিক, পরাণ প্রত্যেকেই চরিত্রানুগ।
অঞ্জন দত্তর চেনা স্টাইলের ছবি। পরিচালক শহরের বেশ কিছু মানুষের জীবনের গল্প বলেছেন যারা একে অপরের সঙ্গে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত
অঞ্জন দত্তর চেনা স্টাইলের ছবি। পরিচালক শহরের বেশ কিছু মানুষের জীবনের গল্প বলেছেন যারা একে অপরের সঙ্গে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত, রয়েছে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন, জীবনের মানে খোঁজার চেষ্টা। তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে বর্তমান সমাজের বেশ কিছু আলোচ্য সমস্যাকেও।
আমি আসবো ফিরে
পরিচালক: অঞ্জন দত্ত
অভিনয়: অঞ্জন দত্ত, কৌশিক সেন, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জনা বসু, দর্শনা বণিক
অঞ্জন দত্তর চেনা স্টাইলের ছবি। পরিচালক শহরের বেশ কিছু মানুষের জীবনের গল্প বলেছেন যারা একে অপরের সঙ্গে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত, রয়েছে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন, জীবনের মানে খোঁজার চেষ্টা। তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে বর্তমান সমাজের বেশ কিছু আলোচ্য সমস্যাকেও। আগাগোড়া ভারী বিষয় নিয়ে আলোচনার মাঝে ছোট ছোট কিছু কমিক রিলিফের ব্যবহারও বেশ ভাল। তবে বিষয়বস্তু অনুযায়ী আরও একটু বেশিই আশা করা হয়েছিল। ছবির দ্বিতীয় ভাগ একটু অযথাই দীর্ঘায়িত মনে হয়েছে, শেষটাতেও তাড়াহুড়োর ছাপ স্পষ্ট। গানগুলির কথা ও সুর ভাল, যা ছবিটিকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। গানের কথায় টুকরো টুকরো উঠে এসেছে নস্ট্যালজিয়া। তবে গান হয়তো কোনও কোনও মানুষের দুঃসময়ের সঙ্গী বা পথ চলার অবলম্বন হতে পারে, কিন্তু যদি শুধুমাত্র কয়েকটি গান এক ধাক্কায় বেশ কয়েকজন লোকের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়, তা কি পুরোপুরি বাস্তবসম্মত বলা যায়? অভিনয়ে উঠতি গায়ক অর্কর ভূমিকায় অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত (রণজয়), অঞ্জনা বসু (মালা) সহ সকলেই নিজের দায়িত্বটুকু ভালই পালন করেছেন। সিনেমার দৃশ্যপটগুলি প্রশংসনীয়।
অনেকগুলি বলিউডি রোম্যান্টিক কমেডি ছবির থেকে কিছু-কিছু ঘটনা তুলে যদি একটা গল্প বানানোর চেষ্টা হয়, আর সেটা যদি মিশে যায় দুর্বল অভিনয় ও একই ধরণের সংলাপের সঙ্গে, তাহলে যা তৈরি হয়, সেটাই হল ‘চালবাজ়’।
অনেকগুলি বলিউডি রোম্যান্টিক কমেডি ছবির থেকে কিছু-কিছু ঘটনা তুলে যদি একটা গল্প বানানোর চেষ্টা হয়, আর সেটা যদি মিশে যায় দুর্বল অভিনয় ও একই ধরণের সংলাপের সঙ্গে, তাহলে যা তৈরি হয়, সেটাই হল ‘চালবাজ়’।
চালবাজ়
পরিচালক: জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
অভিনয়: শাকিব খান, শুভশ্রী গাঙ্গুলি, আশিস বিদ্যার্থী, রজতাভ দত্ত
অনেকগুলি বলিউডি রোম্যান্টিক কমেডি ছবির থেকে কিছু-কিছু ঘটনা তুলে যদি একটা গল্প বানানোর চেষ্টা হয়, আর সেটা যদি মিশে যায় দুর্বল অভিনয় ও একই ধরণের সংলাপের সঙ্গে, তাহলে যা তৈরি হয়, সেটাই হল ‘চালবাজ়’।
কাকার বাড়িতে বড় হওয়া শ্রীজাতার (শুভশ্রী) বিয়ে ঠিক করা হয়, তার উচ্চশিক্ষার স্বপ্নকে থামিয়ে দিয়ে। বিয়ের রাতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে, লন্ডনে পুরনো প্রেমিকের কাছে চলে যায় শ্রীজাতা। গিয়ে জানতে পারে সেই ছেলেটির এক বিদেশিনী প্রেমিকা আছে। বিয়ে, এবং বিদেশে পিএইচডি করার স্বপ্ন, দুটোই ভেঙে যায় শ্রীজাতার। এমন সময়েই তার পরিচয় হয় টাকা রোজগারের জন্য ড্রাইভার থেকে শেফ, সব রকম কাজ করা রাজার সঙ্গে (শাকিব)। রাজা ‘টাকার জন্য সব করতে পারে, কিন্তু নিজের কাছে নিজে ছোট হয়ে যায় এমন কিছু করবে না’। তারা একসঙ্গে দেশে ফিরে এলে শুরু হয় নানা ঘটনা। শ্রীজাতার বাড়ির লোকজন রাজাকেই তার বর ভেবে বসে।
চেনা ছকে বাঁধা হালকা মেজাজের রোম্যান্টিক কমেডি ছবি হতেই পারত ‘চালবাজ়’। আর সেটা হলেই হয়তো ভাল হত। ছকের বাইরে বেরনোর জন্য কিছু দুঃখের মুহূর্ত ঢোকাতে গিয়েই তাল কাটল ছবির। প্রথমত, অতিরিক্ত দীর্ঘ হয়ে যাওয়ায় মাঝে বেশ কিছু অংশ খুবই অপ্রয়োজনীয় লাগে। দ্বিতীয়ত, দুর্বল অভিনয়ের কারণে দৃশ্যগুলি ঠিক বিশ্বাসযোগ্যও হয়ে ওঠে না। শাকিবের মুখের অভিব্যক্তির কোনও বদল ঘটে না খুশির বা দুঃখের দৃশ্যে। গ্ল্যামার কুইনের অবতার থেকে বেরিয়ে আসার কোনও চেষ্টা দেখা যায় না শুভশ্রীর অভিনয়ও। রাজার সহায়কের ভূমিকায় রজতাভর অভিনয় স্বভাবতই ভাল। এক কাপ চা বানাতেও জানে না সে, অথচ এক ব্যাগ হাতা-খুন্তি নিয়ে গোয়া থেকে লন্ডন চলে যায় শেফ হতে। রজতাভর কমিক টাইমিং নিয়ে আলাদা করে কিছু বলা নিষ্প্রয়োজন। শ্রীজাতার কাকার ভূমিকায় আশিস বিদ্যার্থীও ভাল।
সবশেষে বলা যায়, গল্পটি থেকে অনেক অংশ বাদ দিয়ে, হাসির সংলাপগুলি আরও বুদ্ধিদীপ্ত করে, আরও সহজভাবে গল্পটি বললে হয়তো আর একটু ভাল লাগত।
সৌমিত্র-পরমের যুগলবন্দি
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর পরমব্রতকে একসঙ্গে রুপোলি পরদায় এনে ফেললেন পরিচালক অভিজিৎ গুহ…